ইসলাম কেমন হয় দেখালেন নাজিহ
প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ
ইরাকের বালাদ শহরের বাসিন্দা নাজিহ শাকির আল-বালদাওয়ি। খুব বিখ্যাত কোন মানুষ নয়। কিন্তু এখন গোটা পৃথিবী তাঁকে চিনে গেল। কারণ ধর্মের নামে হানাহানির এই যুগে তিনি পৃথিবীকে দেখিয়ে দিলেন সত্যিকার ধর্মের স্বরূপটা কেমন হয়।
ধর্মের নামে যা চলছে সম্প্রতি, তা যে আসলে ধর্ম নয়, তা সাধারণ বোধ সম্পন্ন মানুষকে বুঝিয়ে দিতে হয় না সম্ভবত। ধর্মকে কেন্দ্র করে যত হানাহানি, তার মূলে এক ধূম্রজাল। এক দল সুযোগসন্ধানী, ক্ষমতালোভী দুর্বৃত্ত ধর্মের নামে বিশ্ব মানবতার টুটি চেপে ধরেছে। নিজের স্বার্থসিদ্ধর জন্য ধর্মকে ব্যবহার করে তারা ঘটাচ্ছে রক্তপাত, ছড়াচ্ছে প্রতিহিংসার বিষবাষ্প।
কিন্তু ধর্ম তো আসলে তা নয়। ধর্ম শান্তি, ধর্ম সম্প্রীতি। নাজিহ শাকির তাই বোঝালেন। শুক্রবার ইরাকের এক সুপ্রাচীন মজসিদে সমাগমের মাঝে বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য মসজিদের দরজা পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল আইএস জঙ্গি। নাজিহ বুঝতে পেরেছিলেন বিস্ফোরণ ঘটবেই। তাই নিজের প্রাণ বাজি রেখে শেষ চেষ্টা করলেন একটা। বিস্ফোরণের আগের মুহূর্তে তিনি কঠিন আলিঙ্গনে আবদ্ধ করে নিয়েছিলেন আত্মঘাতী জঙ্গিকে। ধর্ম আলিঙ্গন করে নিয়েছিল অধর্মকে।
নাজিহ শাকিরের শরীর ছিন্নভিন্ন হয়ে গেলেও বেঁচে গেল অন্য অনেক প্রাণ। আর ততক্ষণে নাজিহ শাকির বুঝিয়ে দিলেন দুর্বৃত্তের তৈরি করা ধূম্রজালটা আসলে অধর্ম। ঐ এক আলিঙ্গন বুঝিয়ে দিল, ধর্ম শান্তির জন্য, সুস্থিতির জন্য, নিবেদনের জন্য, ভালবাসতে শেখার জন্য, নীতিবোধের জন্য, মানবজাতির সুরক্ষার জন্য। বুঝিয়ে দিল, ইসলাম অথবা যে কোনও ধর্মই মানবজাতির কল্যাণার্থে। ধ্বংস আর মৃত্যুর নাম কখনও ধর্ম হতে পারে না।
তবে নাজিহ শাকিরের এই চরম বলিদানও হামলাকারীদের মানবিক বোধের উন্মেষ ঘটাতে পারেনি। পরবর্তীতে আত্নঘাতি হামলাকারীরা মসজিদের দিকে মর্টার গোলা নিক্ষেপ করে। এই হামলায় মোট ৪০ জন নিহত এবং ৭৪ জন আহত হয়েছে। ৩ জন হামলাকারীও এতে নিহত হয়। হামলাকারীরা সিকিউরিটি ফোর্সের ইউনিফর্ম পরিহিত ছিল। হামলায় মসজিদ নিকটবর্তী মার্কেটের প্রচুর ক্ষতি হয়।
আইএস এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
প্রতিক্ষণ/এডি/সাদিয়া